ক্যাটাগরি

করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’ শুরু

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি
বিভাগ, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই এবং গ্রামীণফোন যৌথভাবে মঙ্গলবার থেকে এ ক্যাম্পেইন
শুরু করেছে।

বুধবার ভিডিও কনফারেন্সিংয়ের
মাধ্যমে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক আনুষ্ঠানিকভাবে এ
ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে জানানো হয়,
সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশজুড়ে লকডাউন পরিস্থিতি অব্যাহত রয়েছে। দেশের প্রতিটি নাগরিকের
জন্য করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা কেন্দ্র,
ফার্মেসি, সুপারমার্কেট, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দোকান, মোবাইল ফোন রিচার্জ ও ক্যাশ
আউট পয়েন্টগুলোর অবস্থান এবং তাদের সেবাদানের সময়সূচি জানা থাকা অত্যন্ত জরুরি।

স্বাস্থ্যসেবা পরিকল্পনাকারী
এবং ফ্রন্টলাইন থাকা কর্মীদের জন্য পরবর্তী আইসোলেশন সেন্টার এবং আইসিইউগুলো স্থাপনের
পরিকল্পনা করার সুবিধায় এ সমস্ত তথ্য জানা থাকা প্রয়োজন। এছাড়াও, জরুরি খাদ্য ও ওষুধ
সরবরাহের কাজে নিয়োজিত এজেন্টদের সব রাস্তা ভালো করে জানা দরকার।

গুগল ম্যাপস এবং ওপেন
স্ট্রিট ম্যাপে বাংলাদেশের শহর অঞ্চলগুলো প্রাধান্য পেয়েছে। ম্যাপে দেশের গ্রামাঞ্চলের
বেশিরভাগ স্থাপনাগুলো নির্দিষ্ট করা হয়নি; এর ফলে গ্রামাঞ্চলের নাগরিক, স্বাস্থ্যসেবায়
নিয়োজিত ব্যক্তি এবং ই-কমার্স ডেলিভারি এজেন্টরা ম্যাপ দেখে নির্দিষ্ট স্থান খুঁজে
বের করতে সমস্যায় পড়ছেন।

এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে
গুগল ম্যাপস এবং ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ আরো সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে ঘরে বসে থাকা দেশের যুবসমাজের
ক্ষমতায়নের জন্য ‘বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ’ ক্যাম্পেইন অংশ নিতে আগ্রহী যে কোনও স্বেচ্ছাসেবক
bangladeshchallenge.com  এবং corona.gov.bd এ নিবন্ধন করতে পারেন। এই ক্যাম্পেইন
৩০ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে।

প্রতিমন্ত্রী পলক বলেন,
“ক্রাউডসোর্সিং এর মাধ্যমে গুগল ম্যাপস এবং বাংলাদেশের ওপেন স্ট্রিট ম্যাপ আরও সমৃদ্ধ
হবে যা জরুরি পরিস্থিতিতে দেশের জনগণকে নিকটস্থ হাসপাতাল ও ফার্মেসি খুঁজে পেতে সাহায্য
করবে এবং করোনাভাইরাসের কারণে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কমিনিটিগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত
নিতে সহায়তা করবে।”

করোনাভাইরাস সংক্রমণের
কারণে উদ্ভূত এই সংকটময় পরিস্থিতি সম্পূর্ণ কাটিয়ে ওঠার জন্য বাংলাদেশ সরকার দক্ষতার
সাথে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে জানিয়ে পলক বলেন,“এই সংগ্রামে সফল হওয়ার জন্য সর্বস্তরের
মানুষের সহযোগিতা একান্তভাবে কাম্য। আমি গ্রামীণফোনকে ধন্যবাদ জানাই সহযোগিতার হাত
বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য এবং অন্যান্য কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসার জন্য আহবান
জানাই।”

এটুআই এর পলিসি অ্যাডভাইজার
আনির চৌধুরী বলেন, “করোনাভাইরাসের কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে গুগল ম্যাপ এবং ওপেন স্ট্রিট
ম্যাপকে আরও সমৃদ্ধ করার মাধ্যমে জরুরি কাজে নিয়োজিত নাগরিক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং ই-কমার্স
ডেলিভারি এজেন্টদের সহযোগিতা করার জন্য আমি দেশের উদ্যমী তরুণদের আহবান জানাচ্ছি। তরুণরা
তাদের বাড়িতে বসে নিরাপদ শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখেই এই ম্যাপিং কার্যক্রমে অংশ নিতে
পারেন।”

গ্রামীণফোন এর সিইও
ইয়াসির আজমান বলেন,“করোনাভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধে সমগ্র পৃথিবী আজ একত্রিত হয়েছে।
আমরা প্রত্যেকেই, বিশেষ করে তরুণরা, বাড়িতে বসেই যার যার অবস্থান থেকে ভাইরাসের বিরুদ্ধে
এই সংগ্রামে অংশ নিতে পারি।

“আমরা বিশ্বাস করি,
যারা অসহায় পরিস্থিতিতে আছেন, তাদের কাছে দরকারি তথ্য পৌঁছে দিতে এই কার্যক্রম গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রাখবে। এই সামগ্রিক প্রচেষ্টাতে বাংলাদেশ সরকার, এটুআই এবং অন্যান্য সহযোগী
প্রতিষ্ঠানের সাথে অংশীদার হতে পেরে আমি গ্রামীণফোনের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞতা
প্রকাশ করছি।”

সংবাদ সম্মেলনে প্রেনিউর
ল্যাবের প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও আরিফ নিজামি বলেন, “বাংলাদেশ চ্যালেঞ্জ ক্যাম্পেইন এমনভাবে
ডিজাইন করা হয়েছে যেন প্রত্যেকেই তাদের বাড়ি থেকে একটি ইনফরমেশন ডাটাবেজ তৈরিতে অংশ
নিতে পারে এবং সবাই একই সময়ে তা ব্যবহার করতে পারে। প্রজন্মের জন্য সামনে এগিয়ে আসার
এবং দেশের লোকাল ম্যাপের কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করার দারুণ সুযোগ।”

পুরো ক্যাম্পেইনের
সময়ে ম্যাপিং এক্সপার্টরা স্বেচ্ছাসেবীদের এই ব্যাপারে সব রকমের সহযোগিতা করবে।এছাড়া
ওয়েবসাইটের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবীদের প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে বলে জানান আরিফ নিজামি।