পুনর্বহালের আদেশের খবর পেয়ে সোমবার সকালে পাবনার ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনের কার্যালয়ে হাজির হন রেলের এই কর্মকর্তা।
এ সময় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ঊর্ধ্বতন এসআরআইটি (সিনিয়র ইন্সপেক্টর অব ট্রেইন) বরকতুল্লাহ আলামিনকে ডিআরএম অফিস থেকে দেওয়া কন্ট্রোল অর্ডার (নং ২৮৬, তাং ৮ মে-২০২২) দেওয়া হয়েছে। তার নির্দেশনায় অফিসে উপস্থিত হয়েছি। যোগদানের আবেদনপত্র জমা দিয়েছি। কর্তৃপক্ষ শিডিউল দিলে ডিউটি শুরু করব।”
এর আগে রোববার দুপুরে ডিআরএম শহীদুল ইসলাম গণমাধ্যমে শফিকুলকে পুনর্বহালের কথা জানান।
রেলমন্ত্রীর ‘আত্মীয় পরিচয়’ দিয়ে বিনা টিকিটে ট্রেনে ভ্রমণ করায় গত ৪ মে রাতে ঈশ্বরদী থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস’ এর তিন যাত্রীকে জরিমানা করেছিলেন টিটিই শফিকুল। কিন্তু রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে পরদিন তাকে সাময়িক বরখাস্ত করে রেল কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি প্রকাশ্যে এলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয় সমালোচনা। টিআইবি এবং যাত্রী কল্যাণ সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ওই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে শফিকুলকে বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।
রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন শনিবার সাংবাদিকদের কাছে দাবি করেন, আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বিনা টিকেটে ট্রেনে ভ্রমণ করা তিন যাত্রীর সঙ্গে তার ‘কোনো সম্পর্ক নেই’। তার ‘নাম ভাঙিয়ে’ কেউ হয়তো সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। যাত্রীদের সঙ্গে ‘খারাপ আচরণ করায়’ শফিকুলকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে তিনি কর্মকর্তাদের কাছে শুনেছেন।
টিকিটবিহীন যাত্রীর সঙ্গে আত্মীয়তা স্বীকার করলেন মন্ত্রী, টিটিইর বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার
টিটিই বরখাস্ত নিয়েও কিছু জানতাম না: রেলমন্ত্রী
কিন্তু বিনা টিকেটেরে ওই যাত্রীরা যে রেলমন্ত্রীর স্ত্রীর ঘনিষ্ঠ আত্মীয় সে বিষয়টি তুলে ধরে প্রতিবেদন প্রকাশ করে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম। এরপর রোববার ফের সংবাদ সম্মেলনে এসে রেলমন্ত্রী বলেন, টিকিট ছাড়া ভ্রমণ করা যাত্রীরা যে তার আত্মীয়, তা তিনি জানতেন না।
মন্ত্রী জানান, টিটিই শফিকুল ইসলামের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তড়িঘড়ি বরখাস্তের আদেশ দেওয়ায় রেলের বিভাগীয় বাণিজ্যিক কর্মকর্তা (পাকশীর ডিসিও) নাসির উদ্দিনকে নোটিস দিয়ে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
টিটিই শফিকুল ইসলাম সেদিন তার দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছেন মন্তব্য করে মন্ত্রী বলেন, “টিটিইর কাজ হল রেলে শৃঙ্খলা আনা। তার কাজই তো রেলে যাত্রীদের সহযোগিতা করা, তাকে সাহায্য করা, সঠিক জায়গায় সেবা দেওয়া।”
পরে এদিন দুপুরে পাকশীতে শফিকুল সাংবাদিকদের বলেন, “এটাই আমার প্রথম সাময়িক বরখাস্ত। এর আগে কখনও সাময়িক বরখাস্ত হইনি। ওই রাতে যখন আমি গাড়িতে দায়িত্ব পালন করেছি, সেদিন আপ অ্যান্ড ডাউনে ৭৮ হাজার টাকার রাজস্ব আদায় করে জমা দিয়েছি।”