সোমবার দুপুরে ডেমরা রোডের কাজলা ব্রিজ এলাকায় অভিযান চালিয়ে মেসার্স অদ্বিতি ট্রেডিং, মেসার্স সিফাত ট্রেডিং এবং মেসার্স মিন্টু স্টোরের মালিককে ৫০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর, জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) এবং র্যাব-৩ এর যৌথ অভিযানে তিন দোকানের গোডাউন থেকে মোট ২৯ হাজার ৫৮০ লিটার খোলা পাম অয়েল এবং সয়াবিন তেল উদ্ধার করা হয়।
অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ঢাকা জেলা কার্যালয়ের অফিস প্রধান মো. আব্দুল জব্বার মন্ডল এবং ঢাকা বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোঃ মাগফুর রহমান।
আব্দুল জব্বার মন্ডল বলেন, “ক্রয় বিক্রয়ে পাকা রশিদ সংরক্ষণ না করা, পুরনো রেটের তেল মজুদ করে নির্ধারিত বাজারমূল্যের চেয়ে অধিক মূল্যে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি করছিল।”
আগের দামে তেল কিনে সে অনুযায়ী প্রতি লিটার নির্ধারিত ১৪০ টাকার পরিবর্তে তারা ১৮৩ থেকে ১৮৪ টাকায় বিক্রি করছিল বলে জানান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা।
এ অপরাধে তিন দোকানিকে ৫০ হাজার টাকা করে সর্বমোট এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “উদ্ধার করা তেল সরকারি রেটে বিক্রি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”
র্যাব-৩ এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বীণা রানী দাস বলেন, “এই তিনটি মুদি দোকানে সয়াবিন তেলের মূল্য বেশি রাখা ছাড়াও মজুদ বেশি রাখা হয়েছে।”
এ ছাড়া কোন উৎস থেকে দোকানিরা মালামাল কিনেছেন তার ত্রুয় রশিদও তারা দেখাতে পারেননি।
রোজার মাঝামাঝি সময় থেকেই খুচরা বাজারে ভোজ্যতেলের সরবরাহ কমে যায়। এর ফলে সারাদেশে সংকট তৈরি হতে থাকে। আর ঈদের আগে দোকানের তাকে সয়াবিন তেলের দেখা মেলেনি।
বাজার থেকে তেল ‘হাওয়া’ হয়ে যাওয়ার মধ্যেই ঈদের পর প্রথম কার্যদিবস বৃহস্পতিবার মিল মালিকরা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে নিজেরাই মূল্য বাড়ানোর ঘোষণা দেন।
নতুন দর অনুযায়ী, খোলা সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৮০ টাকা, যা আগে ১৪০ টাকা ছিল। বোতলজাত সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ১৬০ টাকা করা হয় ১৯৮ টাকা। ৫ লিটারের বোতলের দাম হয় ৯৮৫ টাকা।
ওই তিন দোকানের মালিকরা জানান, তাদের নির্ধারিত দামের চেয়ে বেশি দামে পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনতে হয়েছে। পাইকারি ব্যবসায়ীরা তেল বিক্রির সময় তাদের পাকা রশিদ দেন না বলেও অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে দেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত পরিচালক আবদুল জব্বার মন্ডল বলেন, “পণ্য ক্রয় বিক্রয়ের রশিদ সরবরাহ করার ব্যাপারটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
“তারা যদি রশিদ না পান, সেক্ষেত্রে ভোক্তা অধিকারের কাছে লিখিত অভিযোগ করলেই আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে প্রস্তুত। কিন্তু তারা আমাদের কাছে কোনো লিখিত অভিযোগ দেননি।”
এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের এ কর্মকর্তা।
আরও পড়ুন:
চট্টগ্রামের দোকানে ‘গোপন ভাণ্ডারে’ ১৫ হাজার লিটার সয়াবিন
সয়াবিন তেলের দাম লিটারে ৪০ টাকা বাড়ল
কোথাও মিলছে না সয়াবিন তেল, হঠাৎ ‘উধাও’
চট্টগ্রামে এবার দোকানের গুদাম থেকে হাজার লিটার সয়াবিন তেল উদ্ধার
দোকানে তেল নেই, দোকানির বাড়িতে ২৩২৮ লিটার সয়াবিন
৪০ হাজার টন সয়াবিন তেল মজুদদারদের ঘরে, ধারণা ভোক্তা অধিদপ্তরের