চীনে নতুন ধরনের এই ভাইরাস সংক্রমণের পর তা মহামারী রূপ নিয়ে পাঁচ মাসের আগেই
আগেই মৃতের সংখ্যা লাখের কাছাকাছি পৌঁছে গেল।
জনস হপকিন্স ইউনিভার্সিটির বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের
১৮৪টি দেশ ও অঞ্চলে ছড়িয়ে নভেল করোনাভাইরাস আক্রান্ত করেছে ১৫ লাখ ৩৭ হাজার জনকে,
আর মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৯৩ হাজার ৪২৫।
মৃতের সংখ্যায় শীর্ষে রয়েছে ইতালি, দেশটিতে এই পর্যন্ত ১৮ হাজার ২৭৯ জন মারা
গেছে কোভিড-১৯ রোগে।
মৃতের সংখ্যায় এদিনই স্পেনকে ছাড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র উঠেছে দ্বিতীয় স্থানে।
দেশটিতে মারা গেছে ১৫ হাজার ৭৭৪ জন। তৃতীয় স্থানে থাকা স্পেনে মৃতের সংখ্যা ১৫
হাজার ২৩৮।
গত বছরের ডিসেম্বরে চীনের হুবেই প্রদেশের উহানে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর
প্রথম মৃত্যুটি ঘটেছিল ১১ জানুয়ারি।
চীনের বাইরে প্রথম মৃত্যুটি ঘটেছিল প্রায় এক মাস পর ২ ফেব্রুয়ারি
ফিলিপিন্সে। সেদিন মোট মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ৩৬২।
মৃতের সংখ্যা ১ হাজারে পৌঁছেছিল ১০ ফেব্রুয়ারিতে। অর্থাৎ প্রথম মৃত্যুর পর মৃতের
সংখ্যা ১ হাজারে পৌঁছতে লেগেছিল ঠিক এক মাস। এরপর মৃতের সংখ্যা দুই হাজারে যেতে
সময় লাগে ৮ দিন।
তার এক মাস পর ১৯ মার্চ মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার ছাড়ায়। বিপর্যস্ত ইউরোপে এরপর
লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকে মৃত্যু।
>> ১০ হাজার থেকে ২০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ৬ দিন
>> ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ৬ দিন
>> ৩০ হাজার থেকে ৪০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ৩ দিন
>> ৪০ হাজার থেকে ৫০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন
>> ৫০ হাজার থেকে ৬০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন
>> ৬০ হাজার থেকে ৭০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন
>> ৭০ হাজার থেকে ৮০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন
>> ৮০ হাজার থেকে ৯০ হাজারে যেতে সময় লাগে- ২ দিন
অর্থাৎ এখন প্রতি দুই দিনে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজার করে বাড়ছে।
নতুন করোনাভাইরাস আসলে ছড়ালো কীভাবে?
নতুন করোনাভাইরাসের ঠিকুজি তালাশ
কোভিড-১৯ রোগে মৃত্যুর ঝুঁকি কতটা?
কোভিড-১৯: ঘ্রাণশক্তি লোপ পাওয়াও একটি উপসর্গ?
এর মধ্যে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যুর ঘটনা গত ৭ এপ্রিল, সেদিন ৭ হাজার ৮৩ জনের
মৃত্যু ঘটিয়েছিল নভেল করোনাভাইরাস।
স্পেনের পর সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ঘটেছে ফ্রান্সে, সেখানে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০
হাজার ৮৬৯। তার পেছনেই রয়েছে যুক্তরাজ্য ৭ হাজার ৯৭টি মৃত্যু নিয়ে।
তালিকায় ষষ্ঠ স্থানে থাকা ইরানে মৃতের সংখ্যা ৪ হাজার ১১০।
ইরানের পরই রয়েছে চীন, যেখান থেকে এই ভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ও প্রথম মৃত্যু
ঘটেছিল।
পরিস্থিতি সামলে নিয়ে আসা দেশটিতে মৃতের সংখ্যা এখন ৩ হাজার ৩৩৫।
মৃতের সংখ্যায় চীনের পর রয়েছে যথাক্রমে বেলজিয়াম (২৫২৩), জার্মানি (২৪৫১) ও
নেদারল্যান্ডস (২৩৯৬)। তালিকায় তাদের নিচে থাকা সুইজারল্যান্ডে মৃত্যু এখনও এক
হাজারের নিচে।
দক্ষিণ এশিয়ায় এই পর্যন্ত ২৯১ জনের মৃত্যু ঘটেছে করোনাভাইরাসে। এর মধ্যে
সর্বোচ্চ ১৯৯ জন মারা গেছে ভারতে, পাকিস্তানে মারা গেছে ৬৭ জন।
এছাড়া বাংলাদেশে ২১ জন এবং শ্রীলংকায় সাতজনের মৃত্যু ঘটেছে।
করোনাভাইরাস মহামারীতে ব্যস্ত নিউ ইয়র্ক এখন খাঁ খাঁ। ছবি: রয়টার্স
চীন থেকে ছড়িয়ে ইউরোপকে বিপর্যস্ত করার পর এখন যুক্তরাষ্ট্র কোভিড-১৯
মহামারীর কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।
মাত্র কয়েকদিনেই যুক্তরাষ্ট্রে আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বেড়ে বিশ্বের
শীর্ষে নিয়ে গেছে দেশটিকে।
যুক্তরাষ্ট্রে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত এখন সাড়ে ৪ লাখের বেশি, অর্থাৎ বিশ্বে
মোট আক্রান্তের তিন ভাগের এক ভাগই যুক্তরাষ্ট্রে।
যুক্তরাষ্ট্রে শুধু নিউ ইয়র্ক রাজ্যে আক্রান্তের সংখ্যাও এই তালিকায় দ্বিতীয়
স্থানে থাকা স্পেনের চেয়ে বেশি।
স্পেনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫২ হাজার ৪৪৬ জন। তার পরেই
রয়েছে ইতালি, ১ লাখ ৪৩ হাজার ৬২৬ জন কোভিড-১৯ রোগী নিয়ে।
যুক্তরাষ্ট, স্পেন ও ইতালির পর লাখের বেশি রোগী রয়েছে কেবল জার্মানিতে,
সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ১৫ হাজার ৫২৩ জন।
জার্মানির পরে রয়েছে যথাক্রমে ফ্রান্স (৮৩০৮০), চীন (৮২৮৮৩), ইরান (৬৬২২০),
যুক্তরাজ্য (৬১৫১৯) ও তুরস্ক (৪২২৮২)।
দক্ষিণ আমেরিকায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত ব্রাজিলে ১৬ হাজার ৪৭৪ জন, আফ্রিকায় সবচেয়ে বেশি রোগী দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৮০০ জন।
এশিয়ায় দক্ষিণ কোরিয়ায় ১০ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হয়েছে, জাপানে এই
সংখ্যা সাড়ে ৪ হাজার। ইন্দোনেশিয়ায়ও আক্রান্ত ৩ হাজার ছাড়িয়েছে।
দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত এখন ভারতে ৬ হাজার ৬৫৩ জন। পাকিস্তানে রোগীর
সংখ্যা ৪ হাজার ৪৮৯ জন।
বাংলাদেশে একদিনে শতাধিক রোগী বেড়ে নভেল করোনাভাইরাসে
আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩৩০ জন।