নিহত দশম শ্রেণির ছাত্র জিসান (১৭) মালয়েশিয়া প্রবাসী নজরুল ইসলাম হাওলাদারের একমাত্র ছেলে, স্থানীয় একটি মাধ্যমিক স্কুলে পড়ত সে। দাদা কাশেম হাওলাদারের (৬৬) বাড়িতেই সে থাকত।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর মঙ্গলবার ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, মুলাদী থানার জালালাবাদে গত ২৮ এপ্রিল ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে। বাড়ির অন্যান্যদের কথাবার্তা শুনে বাগানের নারিকেল ও লেবু তুলেছে সন্দেহ কাশেম হাওলাদার তার নাতি জিসানের মাথায় ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে বাড়ি দেন।
আহত জিসানকে প্রথমে মুলাদি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়, এরপর বরিশাল মেডিকেল হাসপাতাল হয়ে পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আনা হলে সেদিনই জিসানের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর পলাতক ছিলেন দাদা কাশেম হাওলাদার।
ছেলের মৃত্যুর পর জিসানের মা জেসমিন বেগম গত ৩০ এপ্রিল শ্বশুর আবুল কাশেম হাওলাদারকে প্রধান আসামি করে মুলাদী থানায় হত্যা মামলা করেন; মামলা তদন্তের দায়িত্ব পায় সিআইডি।
এরপর সোমবার রাতে সিআইডির এলআইসি শাখা কিশোরগঞ্জ জেলার ভৈরব থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করে।
বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর বলেন, গ্রেপ্তার আবুল কাশেম হাওলাদারের স্ত্রী দুই বছর আগে মারা যান, তার দুই ছেলে। বড় ছেলে নজরুল ইসলাম হাওলাদার প্রায় ১৩ বছর ধরে মালয়েশিয়া প্রবাসী, তারই ছেলে জিসান।
ছোট ছেলে আজিজুলের সঙ্গেই থাকেন আবুল কাশেম। আজিজুল কৃষি কাজ করেন। তার মাধ্যমে মাঝেমধ্যে কাশেমের জন্য বিদেশ থেকে টাকা পাঠান বড় ছেলে নজরুল।
মুক্তা ধর বলেন, ওই বাড়ির পেছনের নারিকেল ও লেবুর বাগান আছে। ২৭ এপ্রিল রাতে বাগানের নারিকেল ও লেবু চুরি হয়। আজিজুলের স্ত্রী আঁখিনুর বেগম সকালবেলা গাছে ফল না দেখে নজরুলের স্ত্রী ও ছেলেমেয়েকে সন্দেহ করে গালিগালাজ শুরু করেন। এক পর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়।
“চিৎকার শুনে ঘর থেকে বের হয়ে মা ও বোনকে ওই মারধরের হাত থেকে ছাড়িয়ে আনে জিসান। তখন চাচা আজিজুলের সঙ্গে জিসানের তর্ক শুরু হলে দাদা আবুল কাশেম উঠানে থাকা ক্রিকেট খেলার ব্যাট দিয়ে জিসানের মাথায় বাড়ি মারেন। জিসান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।”