মঙ্গলবার শহীদ রফিক জব্বার হলের ছাদ থেকে পড়েন অমিত কুমার বিশ্বাস। দুপুরে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিকালে সেখানে তিনি মারা যান।
হাসপাতালের ডিউটি ম্যানেজার ইউসুফ আলী জানান, বিকাল ৫টা ১০ মিনিটে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) তিনি মারা যান।
তার শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি বলে জানান ইউসুফ আলী।
অমিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী। তিনি শহীদ রফিক জব্বার হলের ৩১৫ নম্বর কক্ষের আবাসিক শিক্ষার্থী।
তার গ্রামের বাড়ি খুলনায়। বাবা অজয় কুমার বিশ্বাস বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে কর্মরত আছেন। তিনি পরিবারের একমাত্র সন্তান।
প্রত্যক্ষদর্শী পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৪তম আবর্তনের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান হৃদয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমি তিন তলায় থাকা অবস্থায় ভারী কিছু ছাদ থেকে পড়ার শব্দ শুনি। উকি গিয়ে দেখি নিচে কেউ পড়ে আছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমার ব্লকের ছাত্রদের অবহিত করি। পরে আমরা কয়েকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে অমিতকে পড়ে থাকতে দেখি এবং তখন বৃষ্টি হচ্ছিল।”
তিনি জানান, তারা তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখান থেকে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
তবে ছাদে আর কেউ ছিল কিনা সে বিষয়ে কোনো তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
অমিতের রুমমেট রবিন ঘোষও উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে একত্রে খেয়েছি, আড্ডা দিয়েছি। সেখান থেকে অমিত রুমে চলে আসে, অন্য বন্ধুরাও তাদের হলে চলে যায়। আমরা কয়েকজন তখনও আড্ডারত ছিলাম। কিছুক্ষণ পর আমিও হলে চলে আসি। এসে শুনি অমিত ছাদ থেকে পড়ে গেছে।”
অমিতের কোনো সমস্যা ছিল কি না জানতে চাইলে রবিন বলেন, “তাকে কখনও হতাশাগ্রস্ত দেখিনি, সবসময় হাসিখুশি ছিল। তবে সে বেশ কিছুদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভুগছিল।”
শহীদ রফিক জব্বার হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আজকের ঘটনায় আমি গভীরভাবে ব্যথিত। আমার হলে এরকম একটা ঘটনা ঘটবে সেটা ভাবতেই পারছি না। তার পরিবারের প্রতিও গভীর সমবেদনা জানাই। ইতিমধ্যে তার বাবা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের সাথে আমার কথা হয়েছে।”
আহতের ঘটনা শুনে তিনি তাৎক্ষণিক এনাম মেডিকেলের ইমার্জেন্সিতে যান বলে তিনি জানান।
“তাকে হাসপাতালে নেওয়ার পর নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। ধারণা করা হচ্ছে, ছাদের র্যালিংয়ে বসতে গিয়ে বা দাঁড়াতে গিয়ে হয়ত তিনি পড়ে গিয়ে থাকতে পারেন।”
তিনি জানান, মৃতদেহ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত অ্যাম্বুল্যান্সে করে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে। সঙ্গে তার বন্ধুরা যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গাড়ির ব্যবস্থাও করা হয়েছে।