মঙ্গলবার বিকালে অমিতের মৃত্যু হওয়ার পর রাত সাড়ে ৮টার দিকে তার রুমমেটরা
তার বিছানার বালিশের নিচে তা পান। এথেকে শিক্ষার্থীদের ধারণা, অমিত আত্মহত্যা করেছেন।
খবর পেয়ে হল প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ অমিতের কক্ষে গিয়ে ‘সুইসাইড
নোট’টি দেখেন।
প্রাধ্যক্ষ সোহেল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “প্রাথমিকভাবে
নোটের লেখার সাথে তার খাতার লেখার মিল রয়েছে। আমরা আপাতত রুম বন্ধ করে রেখেছি। পুলিশ
এসে বাকিটুকু দেখবে।”
এরপর রাত সাড়ে ১১টায় আশুলিয়া থানা পুলিশের একটি দল হলে অমিতের ৩২৫ নম্বর
কক্ষে উপস্থিত হয়। তারা অমিতের দুই রুমমেটের কাছ থেকে কিছু তথ্য নেন। পরে হল প্রাধ্যক্ষের
উপস্থিতিতে অমিতের দুটি ফোন, দুটি খাতা ও সুইসাইড নোট তদন্তের জন্য নিয়ে যান।
আশুলিয়া থানার পরিদর্শক জিয়াউল ইসলাম (তদন্ত) সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্তের
কাজ মাত্র শুরু হল। তদন্তের জন্য দুটি মোবাইল, দুটি খাতা ও সুইসাইড নোট নিয়েছি। যদি
আরও কিছু প্রয়োজন হয় পরে নেব।”
লাশের ময়নাতদন্ত হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে
এখনও বলা যাচ্ছে না।”
অমিত বিশ্বাস
সুইসাইড নোটে লেখা ছিল, “আমার
মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী না। আমার মস্তিষ্কই আমার মৃত্যুর জন্য দায়ী। আমি নিজেই নিজের
শত্রু হয়ে পড়েছি অজান্তেই। নিজের সাথে যুদ্ধ করতে করতে আমি ক্লান্ত। আর না। এবার মুক্তি
চাই।”
অমিত কিছু নিয়ে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন কি না, সে বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে
কিছু জানা যায়নি।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটার দিকে হলের পাঁচ তলার ছাদ থেকে পড়া অবস্থায় অমিতকে
পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যায় সতীর্থরা।
ওই হলের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার খান হৃদয় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে
বলেন, “আমি তিন তলায় থাকা অবস্থায় ভারী
কিছু ছাদ থেকে পড়ার শব্দ শুনি। উঁকি গিয়ে দেখি নিচে কেউ পড়ে আছে। তাৎক্ষণিকভাবে আমার
ব্লকের ছাত্রদের অবহিত করি। তখন বৃষ্টি হচ্ছিল। আমরা কয়েকজন ঘটনাস্থলে গিয়ে অমিতকে
পড়ে থাকতে দেখি।”
তিনি জানান, তারা অমিতকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে নিয়ে যান। সেখান থেকে
পাঠানো হয় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে।
বিকালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে চিকিৎসাধীন অবস্থায়
তার মৃত্যু হয়।
মৃত্যুর পর তার লাশ খুলনায় পরিবারের কাছে নিতে রওনা হওয়ার কথা থাকলেও
সুইসাইড নোট পাওয়ার পর তা আর নিতে দেওয়া হয়নি।
অমিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের ৪৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী।
তার বাড়ি খুলনায়। বাবা অজয় কুমার বিশ্বাস বাংলাদেশ নৌ বাহিনীতে কর্মরত আছেন। তিনি পরিবারের
একমাত্র সন্তান।