সুস্থ থাকতে অন্ত্র ভালো রাখা অত্যন্ত
গুরুত্বপূর্ণ। তবে তা মোটেই সহজ নয়।
‘ইরটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (আইবিএস)’,
হজমের সমস্যা, ‘সেলিয়াক ডিজিজ’, ‘ক্রোন্স ডিজিজ’ ইত্যাদিতে যারা ভুগছেন তাদের জন্য
অন্ত্রের ওপর ভরসা করাটা কঠিন। আর এগুলো না থাকলেও বদহজম, গ্যাস, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি
সমস্যা কমবেশি সবাইকে ভোগায়।
এজন্য আপনার অন্ত্রের কী প্রয়োজন সেই
ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।
নিয়মিত শরীরচর্চা, মানসিক চাপ কমানো,
অন্ত্রে উপকারী ব্যাক্টেরিয়ার মাত্রা বাড়ায় এমন খাবার খাওয়া ইত্যাদিসহ আরও অনেক অভ্যাস
অন্ত্রের জন্য উপকারী।
তবে মনে রাখা উচিত যে ভালো জিনিসও অতিরিক্ত
খারাপ। তাই অন্ত্র কখন খারাপ আছে সেটা বোঝার পাশাপাশি কখন ভালো আছে সেটা বুঝতে পারাও
দরকার।
সকালে ভালোভাবে শৌচকাজ হয়
যুক্তরাস্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলস’য়ের ‘সিডারস
সিনাই মেডিকাল সেন্টার’য়ের ‘মেডিসিন অ্যান্ড গ্যাস্ট্রোএন্টেরোলজি’ বিভাগের সহকারি
অধ্যাপক মার্ক পিমেন্টেল বলেন, “অভ্যাস মানুষভেদে ভিন্ন। কেউ ব্যায়াম করেন, কেউ কুসুম
গরম লেবু পানি পান করে ইত্যাদি। তবে সবারই সকালে ভালোভাবে মল-বিয়োগ হওয়া উচিত। যদিও
মলত্যাগের কোনো আদর্শ সময় নেই, তা নির্ভর করে মানুষের অভ্যাসের ওপর।”
ওয়েলঅ্যান্ডগুড ডটকম’য়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে
তিনি আরও বলেন, “তবে অধিকাংশ মানুষের ঘুম থেকে ওঠার পরই মলবিয়োগ হওয়া উচিত। ডাক্তারী
ভাষায় শরীর থেকে বর্জ্য নিষ্কাশনের এই অভ্যাসকে বলা হয় ‘ডায়ারনাল প্যাটার্ন’। অন্ত্রের
গড়নটাই এমন যে সকালে মানুষ ঘুম থেকে উঠবে, জাগবে অন্ত্রও, সংকুচিত হবে এবং আগেরদিনের
সকল বর্জ্য অপসারণের জন্য তৈরি করবে। যার নিয়মিত সকালে মলবিয়োগ হচ্ছে, সে ধরে নিতে
পারে যে হজমতন্ত্র ভালো আছে।”
পেট গুড়মুড়
ডা. পিমেন্টেল বলেন, “পেট গুড়মুড় করা
মানে খিদা লাগা এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। বরং পেটে এই শব্দ হওয়ার মানে হল অন্ত্র ভালো
আছে এবং নিজের কাজ করছে। ‘মাইগ্রেটিং মোটর কমপ্লেক্স’ বলা হয় ওই গুড়মুড় শব্দকে। কিছু
না খেলে প্রতি ৯০ মিনিট পর পর এই শব্দ করে পেট পরিষ্কার হয়।”
মানুষের অন্ত্রের দুটি ‘মোড’ আছে, ‘ইটিং
মোড’ আর ‘ক্লিনিং মোড’। যদি সবসময় খেতেই থাকেন তবে ‘ক্লিনিং মোড’ চালু হওয়ার সময় পায়
না।
কর্মক্ষম সারাদিন
“দুপুরে যদি ভাত ঘুম না আসে তার মানে
হল আপনার অন্ত্র ভালো ও সক্রিয় আছে”, বলেন ডা. পিমেন্টেল।
তিনি আরও বলেন, “খাবার হজম করতে অনেক
শক্তি খরচ হয় শরীরের। এখন অতিরিক্ত খেলে শরীরে সবসময় হজমক্রিয়া চলছে। আবার হজমের সমস্যা
থাকলে বাড়তি শক্তি খরচ হয়। শরীরের সিংহভাগ শক্তি যদি হজমে খরচ হয়ে যায় তবে মানুষ ক্লান্তি
অনুভব করবে এটাই স্বাভাবিক। আর হজমতন্ত্র যদি ভালো থাকে, হজমক্রিয়া মসৃণ গতিতে চলতে
থাকে তবে শরীর থাকবে ফুরফুরে।”
ছবি: রয়টার্স।
আরও পড়ুন