কালকিনি থানার ওসি ইশতিয়াক আশফাক রাসেল জানান, ভুক্তভোগী ওই পরিবারের দায়ের করা মামলায় শুক্রবার ভোরে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করেন তারা।
গ্রেপ্তার আনোয়ার কালকিনি পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর।
মামলায় আনোয়ারের ছেলে রিফাত ব্যাপারী ও ভাতিজা সাব্বির ব্যাপারীকে আসামি করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি বলেন, কালকিনি পৌরসভার নয়াকান্দি এলাকায় ঝন্টু চন্দ্র মণ্ডল সম্প্রতি ধান মাড়াই করার জন্য তার এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন ভাড়া আনেন। এদিকে কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেনও ধান মাড়াই করার জন্য একই মেশিন ভাড়া করেন।
বুধবার ঝন্টুর কাছ থেকে কম্বাইন হারভেস্টার মেশিন আনতে তার বাড়ি যান আনোয়ার। কিন্তু ধান মাড়াই শেষ না হওয়ায় মেশিনটি আনোয়ারকে দিতে রাজি হননি ঝন্টু। এর জেরে আনোয়ারের সঙ্গে ঝন্টুর কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে ঝন্টুকে ধান মাড়াই বন্ধ রাখতে বলেন আনোয়ার।
পরে ঝন্টু কালকিনি থানায় ফোন করে ঘটনাটি জানালে বিষয়টি সামাধানের জন্য দুই কনস্টেবলকে তার বাড়িতে পাঠানো হয়। দুইপক্ষের কথা শুনে পুলিশ ঝন্টুকে ধান মাড়াই শুরু করতে বললে আনোয়ার ও তার স্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়ে ঝন্টুকে মারধর করতে শুরু করেন।
এ সময় ঝন্টুর ছেলে তাদের বাঁধা দিতে গেলে আনোয়ারের লোকজন তাকেও মারধর করে বলে জানান ওসি ইশতিয়াক।
এদিকে ওই হামলার একটি ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা গেছে-কাউন্সিলর, তার স্ত্রীসহ কয়েকজন ঝন্টুকে মাটিকে ফেরে মারধর করছেন। এ সময় কাউন্সিলরের স্ত্রী রিক্তা বেগম অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতে শোনা যায়। এ সময় আনোয়ারকে স্ত্রীকে সেখান থেকে সড়িয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঝন্টু সাংবাদিকদের বলেন, “কাউন্সিলর আনোয়ারের আগে থেকেই আমাদের ওপর আক্রোশ ছিল। ওই আক্রোশের জেরেই সে ও তার পরিবারের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আমরা ঘরের চারজনই কমবেশি আহত হই, তবে আমার ছেলে বেশি আহত হয়েছে। ওরে হাসপাতালে ভর্তি করা লাগছে।”
ঝন্টুর ছেলে উজ্জ্বল বলেন, “কাউন্সিলর আর তার স্ত্রী আমাদের গালাগাল করার পাশাপাশি
আমাদের দেশ ছেড়ে যেতেও হুমকি দেয়। তখন আমি ভিডিও করার জন্য মোবাইল বের করলে কাউন্সিলর বলে ওঠে, ও ভিডিও করে কেন? ওরে ধর- বলেই আমার ওপর হামলা চালায় সে।”
অভিযোগের বিষয়ে জানতে আনোয়ারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “ধান মাড়াইয়ের জন্য আমাদের মেশিনের দরকার ছিল। মেশিন আনতে গেলে ঝন্টুর বাড়ি গেলে ওর ছেলে আমার ওপর আক্রমণ করে। আমি একজন কমিশনার। আমার ওপর আক্রমণ করবে, এটা তো খুবই দুঃখজনক ব্যাপার।”
ওসি ইসতিয়াক বলেন, “কাটার মেশিন নিয়ে কাউন্সিলর আনোয়ার ও ঝন্টুর মধ্যে ঝামেলা চলছে খবর পেয়ে পুলিশ দুপক্ষের কথা শুনতে যায়। কিন্তু আনোয়ার ও তার লোকজন অর্তকিত ভাবে হিন্দু পরিবারটির হামলা চালায়। এ ঘটনায় ঝন্টু তিনজনকে আসামি করে হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। বাকি আসামিদের ধরতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।