বুধবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের এক আলোচনা
অনুষ্ঠানে বক্তব্যে এই অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “আজকের পত্রিকায় দেখলাম চালের দাম বাড়তে
শুরু করেছে। এখন তো ভরা মৌসুম, এখন বোরো বেরুচ্ছে, এখন চালের দাম কমে আসার কথা। সেই জায়গায়
চালের দাম বাড়ছে। আবার কারসাজি।
“আওয়ামী দুবৃর্ত্তদের,
আওয়ামী চোর-লুটেরাদের কারসাজিতে এই দাম বাড়ানো হচ্ছে। আবার মুনাফা লুটবে এবং সাধারণ মানুষের পকেট কেটে টাকা নিয়ে যাবে। এটাই হচ্ছে
তাদের মূল লক্ষ্য।”
জিয়াউর রহমানের ৪১তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে
‘বাংলাদেশে কৃষি বিপ্লব: শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়ার
নীতি ও কর্মসূচি’ শিরোনামে এই আলোচনা
সভা করে কৃষক দল।
এতে মূল প্রবন্ধ পড়েন কৃষি
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক গোলাম হাফিজ কেনেডী। তিনি কৃষি খাতে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপ এবং এই খাতে তার অবদান তথ্যচিত্রের
মাধ্যমে তুলে ধরেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, “জিয়াউর রহমানের লক্ষ্য ছিল, মানুষের
কল্যাণ কী করে করা যায়। তিনি মানুষকে জাগিয়ে তুলেছিলেন। মানুষ হতাশার মধ্যে ছিল, সেখান থেকে
জাতিকে টেনে তিনি আশার আলো দেখালেন।
“তিনি একজন স্বপ্নচারী নেতা ছিলেন। সেজন্য অতি অল্প
সময়ের মধ্যে, মাত্র ৪ বছরের মধ্যে পুরো বাংলাদেশের মানুষের
মধ্যে একটা আস্থা, একটা বিশ্বাস তৈরি করতে পেরেছিলেন
– যে উনি পারবেন নেতৃত্ব দিতে এবং সেটা চার বছরে তিনি প্রমাণ করেছিলেন।”
কৃষিতে
জিয়ার অবদান তুলে ধরে সাবেক কৃষি প্রতিমন্ত্রী ফখরুল বলেন, “এই যে বীজ অধ্যাদেশ,
পল্লী বিদ্যুৎ, সার বিতরণ, খাল খনন কর্মসূচি
– সবগুলোর মধ্যে ভিশন,
সামনে স্বপ্ন দেখা, বাংলাদেশকে পুরোপুরিভাবে
খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করা এবং বাংলাদেশকে কারও মুখাপেক্ষী করে না রাখা, কৃষকের অবস্থার উন্নতি করা, সাধারণ মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত
করা – এই বিষয়গুলো জিয়াউর রহমান সাহেব এগিয়ে নিয়েছিলেন।”
বর্তমান সরকারের ‘জিয়াউর রহমানের নাম মুছে ফেলতে চায়’- অভিযোগ
করে তিনি বলেন, “কালকে (মঙ্গলবার) তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, উনি (জিয়াউর
রহমান) নাকি বিশ্বাসঘাতক ছিলেন, আর কী বলেছেন? – খুনি ছিলেন।
“ওনার এই বক্তব্য থেকে তার কালচারটা, তার সংস্কৃতিটার প্রমাণ পাওয়া যায়।
কালকে যেভাবে হুমকি দিয়েছেন ওবায়দুল কাদের সাহেব, এটা কোনো রাজনীতির ভাষা নয়, গণতন্ত্রের
ভাষা নয়। আমরা কখনও তাদের নেতাদেরকে ছোট করে কথা বলি না। জিয়াউর রহমান আমাদেরকে শিখিয়েছেন।”
দেশের বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তনে কৃষকদের ঐক্যবদ্ধ করে ‘অভ্যুত্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে’ গ্রামে-গঞ্জে ছড়িয়ে পড়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।
আলোচনা সভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল
মিন্টু বলেন,
“বাংলাদেশের কৃষি উন্নয়নের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন জিয়াউর রহমান। এখন যারা স্বপ্ন দেখে, তারা স্বপ্ন দেখে কেমনে চুরি করবে, কীভাবে লুটপাট করবে, কীভাবে কারসাজি করে মুনাফা করবে। এছাড়া অন্য কোনো
স্বপ্ন তারা দেখে না।”
জাতীয়তাবাদী কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের
সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুলের সঞ্চালনায় সেমিনারে আরও বক্তৃতা
করেন শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ এম ফারুক, কৃষিবিদ ইব্রাহিম
খলিল, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আসাদুজ্জামান সরকার, কৃষক দলের
যুগ্মসাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ মোশাররফ হোসেন এবং শাহাদাত হোসেন বিপ্লব।