৬ জুন শুরু হচ্ছে অ্যাপলের বার্ষিক আয়োজন
‘ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ডেভেলপার্স কনফারেন্স (ডব্লিউডব্লিউডিসি) ২০২২’। এ আয়োজন যতোই এগিয়ে
আসছে, আইফোন নির্মাতার আসন্ন পণ্য ও সেবা নিয়ে বাজারে জল্পনা-কল্পনার গুঞ্জন যেন ততোই
বাড়ছে।
সে জল্পনা কল্পনার পালে নতুন হাওয়া লেগেছে
ব্লগার রবার্ট স্কোবলের টুইটে। দীর্ঘ টুইটার থ্রেডে ডব্লিউডব্লিউডিসি ২০২২-এ অ্যাপলের
কাছ থেকে প্রত্যাশিত ঘোষণাগুলো নিয়ে লিখেছেন স্কোবল। আর তাতেই উঠে এসেছে অ্যাপলের নিজস্ব
সার্চ ইঞ্জিনের প্রসঙ্গ।
স্কোবলের সঙ্গে এ প্রসঙ্গে আলাপচারিতার
ভিত্তিতে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট টেকরেডার জানিয়েছে, ওই ব্লগারের তথ্যের একাংশ এসেছে শিল্প
সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলাপচারিতা থেকে; আর বাকিটা তার নিজের হিসাব-নিকাশের ফলাফল।
সার্চ ইঞ্জিন বাজারে দীর্ঘদিন ধরে আধিপত্য
ধরে রেখেছে গুগল। অন্যদিকে স্মার্টফোন ও অপারেটিং সিস্টেম কেন্দ্রীক বাজারে গুগল-অ্যাপলের
রেষারেষিও নতুন খবর নয়। ওই রেষারেষির সূত্রে সংশ্লিষ্ট অনেকেরই প্রশ্ন ছিল অ্যাপল নিজস্ব
সার্চ ইঞ্জিন বানানোর উদ্যোগ আদৌ নেবে কি না?
গুগলের মূল প্রতিষ্ঠান অ্যালফাবেট ইনকর্পোরেটেড
নিজেদের আয় ব্যয়ের হিসাব বেশ জটিলভাবে জানায় বলে ‘গুগল সার্চ’ ব্যবসা থেকে প্রতিষ্ঠানের
আয়ের সুনির্দিষ্ট আকার নির্ধারণ বেশ কঠিন কাজ। তবে, এই খাতে গুগলের সবচেয়ে বেশি আয়
আসে বিজ্ঞাপন থেকে। ২০২১ সালে গুগলের বিজ্ঞাপনী আয় ছিল ২১ হাজার কোটি ডলার।
স্কোবলের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হলে অ্যাপল
গুগলের সেই বিজ্ঞাপনী আয়েই ভাগ বসাতে চলেছে বলে মন্তব্য করেছে টেকরেডার। তবে প্রশ্ন উঠেছে, এখনই কেন সার্চ ইঞ্জিনের দিকে
ঝুঁকবে অ্যাপল; আগে বা পরে নয় কেন?
প্রশ্নের একটি সম্ভাব্য উত্তর হতে পারে
যে, অ্যাপল মনে করছে আইওএস এবং সাফারি ব্রাউজার এমন একটি পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে চাইলেই
সরাসরি গুগলকে চ্যালেঞ্জ করতে পারবে তারা।
এক সাম্প্রতিক ক্লাস-অ্যাকশন মামলার
নথিপত্র থেকে চমকপ্রদ তথ্য মিলেছে। সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে গুগলের সঙ্গে অ্যাপলের বিশেষ
চুক্তি ছিল। ওই চুক্তির অংশ হিসেবে সাফারি ব্রাউজারের ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন হিসেবে নিশ্চিত
ছিল গুগলের অবস্থান। এর বদলে প্রতি বছর সর্বোচ্চ দুই হাজার কোটি ডলারের আর্থিক সুবিধা
পেত অ্যাপল। আর চুক্তির একটি শর্ত ছিল, নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন পণ্য উন্মুক্ত করতে পারবে
না অ্যাপল।
আর নতুন একটি অ্যান্টিট্রাস্ট মামলার
আশঙ্কায় অ্যাপলের নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন চালু করার সম্ভাবনা আরও বাড়ছে বলে উঠে এসেছে
টেকরেডারের প্রতিবেদনে।
অন্যদিকে, সাফারি ব্রাউজারের একশ কোটির
বেশি ব্যবহারকারী অ্যাপলের সার্চ ইঞ্জিনের সাফল্যের নিশ্চয়তাও দিচ্ছে না। ব্রাউজার
এবং সার্চ ইঞ্জিনের বাজারে নিজের অবস্থান তৈরির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে
বেশি ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেমের নির্মাতা মাইক্রোসফট।
এমন পরিস্থিতিতে সার্চ ইঞ্জিন নিয়ে গুগলের
সঙ্গে বিদ্যমান চুক্তি থেকে সরে আসতে চাইলে অ্যাপলকে নিশ্চিত হতে হবে যে, তাদের সার্চ
ইঞ্জিন বিজ্ঞাপনী আয়ের মাধ্যমে শত কোটি ডলারের আর্থিক ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পারবে।
অ্যাপলের নিজস্ব সার্চ ইঞ্জিন প্রচলিত
সার্চ ইঞ্জিনগুলোর মতো নাও হতে পারে বলে উঠে এসেছে টেকরেডারের প্রতিবেদনে। স্কোবলের
মতে, সম্ভবত অ্যাপলের সার্চ ইঞ্জিন থেকে সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে প্রতিষ্ঠানটির ভয়েস
অ্যাসিস্ট্যান্ট সেবা সিরি।
তবে, আপাতত এ আলোচনা জল্পনা-কল্পনার
মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে। অ্যাপলের পক্ষ থেকে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা অথবা সংশ্লিষ্ট কেউ
আগেভাগেই গোপন তথ্য ফাঁস না করলে নিশ্চিত করে বলার কোনো সুযোগ থাকছে না এক্ষেত্রে।