স্থানীয় সময় বুধবার মধ্যরাতের পর ওই নারীকে ধ্বংসস্তুপ থেকে টেনে বের করে উদ্ধারকারীরা।
ওই সময় তার চেতনা ছিল এবং কীভাবে তাকে নিরাপদে বের করা যাবে সে বিষয়ে তিনি উদ্ধারকারীদের পরামর্শও দিয়েছেন বলে জানিয়েছে রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম।
চাংশা নগরীতে গত শুক্রবার ওই আবাসিক ভবনটি বিধ্বস্ত হয়। এ ঘটনায় ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বিবিসি জানায়, ভবন ধসের এই ঘটনায় ১০ জন বেঁচে গেছে। প্রাথমিকভাবে ৫ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও ধ্বংসস্তুপ থেকে পরে আরও লাশ বের হওয়ায় মোট মৃত্যু বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ জনে।
ওদিকে, ধ্বংসস্তুপে প্রায় ১৩২ ঘন্টা কাটানোর পর জীবিত উদ্ধার পেলেন ওই নারী। চীনের গ্লোবাল টাইমস পত্রিকা জানায়, গত শুক্রবার ২১ বছর বয়সী এই নারী বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় ভবন কেঁপে ওঠে।
সে সময় তিনি চার তলা থেকে পড়ে গেলেও দেয়াল পুরোপুরি ভেঙে পড়েনি এবং তার মাথার উপরে একটি ত্রিভুজ তৈরি হয়েছিল। ধ্বংসস্তূপের মধ্যে একটি পাত্রে থাকা অর্ধেক পানি এক চুমুক করে পান করেই বেঁচে ছিলেন তিনি।
এছাড়া, নিজেকে উষ্ণ রাখার জন্য তিনি লেপ জড়িয়ে নিয়েছিলেন। ভবন ধসের পরই তার মোবাইলের নেটওয়ার্ক বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু তিনি মোবাইলের ব্যাটারি বাঁচিয়ে সেটি তারিখ ও সময় জানার জন্য ব্যবহার করেছিলেন। তিনি উদ্ধার পাওয়ার সময়ও মোবাইলটি কাজ করছিল।
সাহায্যের সংকেত দিতে ওই নারী পাশের দেওয়ালে আওয়াজ করার জন্য একটি শক্ত বস্তু ব্যবহার করেছিলেন।
তিনি বলেন, “বাইরে হট্টগোলের সময় আমি আওয়াজ করিনি। কিন্তু যখনই মনে হয়েছে উদ্ধারকারীরা কাছাকাছি আছে কিংবা বাইরের পরিবেশটা শান্ত আছে তখনই আমি আওয়াজ করেছি। আর খুব দ্রুতই আমি সাড়াও পেয়ে গেছি।”
ধ্বংসস্তুপ থেকে আরেক নারীকেও ৮৮ ঘন্টা পর উদ্ধার করা হয়। এত দীর্ঘ সময় পর ধ্বংসস্তুপ থেকে জীবিত উদ্ধার পাওয়ার ঘটনা চীনজুড়ে মানুষকে উদ্দীপ্ত করেছে। চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং সর্বাত্মক উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাওয়া এবং ভবন ধসের ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।
চীনে আগেও ভবন ধসের এমন অনেক ঘটনা ঘটেছে। দুর্বল অবকাঠামো, নিরাপত্তা অব্যবস্থাপনা এবং স্থানীয় কর্মকর্তাদের মধ্যে দুর্নীতির কারণেই এ ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে।